বার্তা সংস্থা ইকনা: বাঁশ দিয়ে তৈরি বিশ্বের সবচেয়ে বড় কাঠামো হিসেবে ‘গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে’ তার এই কর্ম স্থান পাবে বলে নুরুদ্দিনের আশা।
দুর্গা প্রতিমার সঙ্গে অনিবার্যভাবে আরো যেসব মুর্তি থাকে সেগুলোর একটি অসুর বা মহিষাসুর – এ সেই দুষ্ট দৈত্য যার বিরুদ্ধে দুর্গা লড়াই করেছেন এবং শেষ পর্যন্ত ধ্বংস করেছেন। গৌহাটির কাঠামোতেও এর ব্যতিক্রম ছিলো না। কিন্তু এতে অসুরকে যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে তা খুবই ষড়যন্ত্রমূলক এবং অনেকের জন্য নিতান্ত বেদনাদায়ক।
সাধারণভাবে অসুরকে উপস্থাপন করা হয় গুম্ফধারী, কৃষ্ণ-চর্ম, রোষকষায়িত লোচন বিশিষ্ট একজন যোদ্ধা হিসেবে। যার এক হাতে খোলা তরবারি, আরেক হাতে স্বর্প – ভঙ্গিতে দুর্গার সঙ্গে লড়াইয়ে প্রস্তুতি। অসুরের এই ভাবমূর্তির অন্যথা চোখে পড়েনা বললেই চলে।
কিন্তু বিষ্ণুপুর সার্বজনিন পূজা কিমিটির ওই সুদীর্ঘ দুর্গাপ্রতিমার সঙ্গে এক ভিন্ন চেহারার অসুরকে দেখা যায়। দুর্গার পায়ের তলায় আত্মসমর্পনের ভঙ্গিতে পড়ে থাকা বাঁশের তৈরি এই দুষ্ট দৈত্যকে দেখে স্পষ্টভাবে মনে হবে এ যেন এক মুসলিম ‘মাওলানা’ – মুখভর্তি দাড়ি, আর মাথায় টুপি! পরাজয়ের ভঙ্গিতে যেভাবে পড়ে আছে, তাতে একজন পরাজিত ‘মাওলানা’র অপমানজনক অনুভুতি টের পাওয়া যায়। তাই হতভম্ব দর্শকদের প্রশ্ন, মহিষাসুর টুপি পরতে শিখলো কবে, দাড়িইবা তার ছিলো কখন?
গোমাংস ভক্ষণের জন্য মুসলনমাদের ওপর হামলাই হোক, অথবা মিয়ানমারের নির্মমতা থেকে পালিয়ে আসা অসহায় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের শাস্তি প্রদানই হোক – এই সন্ধিক্ষণে ভারতে যখন নিয়মিত বিরতিতে মুসলিমবিরোধী চেতনার বিক্ষিপ্ত বিস্ফোরণ ঘটে, তখন এই দৈত্যকে একটি মুসলিম রূপ প্রদানের সুস্পষ্ট তাৎপর্য রয়েছে। আর, সেই কাজটিও করানো হয়েছে একজন মুসলিম শিল্পীকে দিয়ে!
তাই মুসলমানদের খোঁচাতে ইচ্ছাকৃতভাবে এটা করা হয়েছে কিনা সেই প্রশ্ন পর্যবেক্ষক মহলের। তাদের জিজ্ঞাসা, হিন্দুত্ববাদে প্রভাবিত বিজেপি সরকারের আমলে এটা কি কোনো ‘পরীক্ষামূলক’ ঘটনা? মুসলমানদেরকে আর কতভাবে অপদস্থ করা যায় তারা কি তার সীমা দেখতে চায়?
এই কাঠামোটি গিনেস বুক অব রেকর্ডস-এ অন্তর্ভুক্ত হলে তা দুর্গা ও অসুরের একটি প্রতিষ্ঠিত প্রতিমূর্তি হিসেবে স্বীকৃতি পাবে। তাহলে, এই নতুন ‘ইসলামিক’ ধাঁচের অসুরই কি হবে আদর্শ। দৈত্য রূপে চিত্রায়িত করে বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের ওপর কালিমা লেপনের আরেক চতুর ষড়যন্ত্র এটি? আরটিএনএন