বার্তা সংস্থা ইকনা: মাত্র দু সপ্তাহ বাকি ভোটের। ফলে মায়ানমার সংলগ্ন উত্তরপূর্বাঞ্চলের পাহাড়ির রাজ্য নাগাল্যান্ড বেশ উতপ্ত। এই ভোট যুদ্ধে অবধারিত মূল ইস্যু গো-মাংস। দেশের অন্যত্র বিশেষ করে হিন্দি বলয়ে গো রক্ষার নামে তাণ্ডব দেখা গেলেও উত্তর পূর্ব ভারত ব্যতিক্রম। বিশেষ করে নাগাভূমি।
বিজেপি শাসিত অন্যান্য রাজ্য যথা উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, গুজরাত, মধ্যপ্রদেশে গোরুর মাংস খাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। গো রক্ষার নামে আক্রান্ত হয়েছেন মুসলিমরা। মৃত্যুও হয়েছে। আর নাগাল্যান্ডের পরিস্থিতি বলছে, এখানে বিজেপি নেতৃত্বরাই গোরুর মাংস খাওয়ার বিধান দিয়েছেন।
কারণ গো মাংস এখানে প্রধান খাদ্য। উঠে এসেছে হিন্দুত্ববাদ বনাম খ্রিষ্ট মতবাদ প্রচারের দ্বন্দ্ব। নাগাল্যান্ডে প্রবল ক্ষমতাশালী ব্যাপটিস্ট চার্চ। এই ব্যাপটিস্ট ওয়ার্ল্ড অ্যালায়েন্সের সভাপতি রেভারেন্ড ড. পল মসিজার সফরে অনুমতি না দেওয়ায় তাদের গোঁসা দেখা দেয়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে নির্বাচনের সময় সমর্থন করেছিল ব্যাপটিস্ট চার্চ। ফলে ড. মসিজাকে নিয়ে বিতর্কের ঢেউ গিয়ে লাগে আমেরিকার উপকূলে। নাগাল্যান্ডের সংখ্যাগুরু খ্রিষ্টানদের মধ্যে ছড়ায় ক্ষোভ। পরিস্থিতি আঁচ করে দ্রুত অবস্থান বদলায় মোদি সরকার।
এরই জেরে নির্বাচনী লড়াইটা বেধে গিয়েছে হিন্দুত্ববাদী বনাম ব্যাপটিস্ট চার্চের মধ্যে। নির্বাচনী বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি আসলে ত্রিশূল বনাম খ্রিষ্টের প্রতীক ক্রসের লড়াই। নাগাল্যান্ড ব্যাপটিস্ট চার্চের (এনবিসিসি) প্রচারে আলোচনা তুঙ্গে উঠেছে। তাদের দাবি, হয় ত্রিশূলকে বেছে নাও নাহলে ক্রসকে ভোট দাও।
জনসংখ্যার বেশিরভাগ অংশ খ্রিষ্টান হওয়ায় চিন্তা বাড়ছে ভাজপা শিবিরে। নাগাল্যান্ড বিধানসভার নির্বাচন আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি। ৬০ সদস্যের বিধানসভা আসনের মধ্যে ক্ষমতাসীন এনপিএফ। তারা বিজেপি নেতৃত্বাধীন 'নেডা'র শরিক। ফলে চাপ বেড়েছে এনপিএফের মতো খ্রিষ্টান প্রভাবিত দলেও।
তাদের হাতে আছে ৪৫টি আসন। আর শরিক বিজেপির দখলে চারটি একটি আছে জেডিইউ দখলে। মুখ্যমন্ত্রী এনপিএফের টি আর জেলিয়াং। লড়াইটা ধর্মভিত্তিক হলেও জেলিয়াংকে বেগ দিতে তৈরি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নেফিউ রিও। গত পৌর নির্বাচনে তার দলে মহিলা প্রার্থীদের অবস্থান নিয়ে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছিল।
তার জেরে ক্ষমতা হারিয়েছিলেন নেফিউ রিও। তিনি এবার স্থানীয় সংগঠন এনডিপিপির সমর্থন নিয়ে লড়াই করবেন। ফলে লড়াইটা কাঁটায় কাঁটায়। অন্যদিকে নির্দলদের ভূমিকাও ফেলে দেওয়ার মতো নয়। গত ভোটে তারা ৮টি আসনে জয়ী হয়েছিলেন।
তবে এনসিপির দখলে আছে একটি আসন। গত বিধানসভায় বিরোধী শিবিরে থাকলেও নির্দলদের কাছে টানতে মরিয়া সবপক্ষই। এসবের মধ্যেই জমে উঠেছে ত্রিশূল বনাম ক্রসের লড়াই। এমটিনিউজ