ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মুস্তফা আল-কাজিমির সাথে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রায়িসি বলেন, ইরাকের সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক সাধারণ ও ঐতিহ্যবাহী নয়, বরং অত্যন্ত গভীর। দুই জাতি ও দেশের সংস্কৃতি এবং বিশ্বাস দীর্ঘদিন যাবত একত্রে কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে সব ক্ষেত্রে সম্পর্ক উন্নয়নে দুই দেশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের গভীর ও আন্তরিক ইচ্ছা রয়েছে।
ইরানের প্রেসিডেন্ট তার প্রতিবেশীদের সাথে সম্পর্ক সম্প্রসারণের জন্য সরকারের নীতিগত নীতির দিকে ইঙ্গিত করে বলেন: "আজ আমরা ইরাককে ইরানী জাতির নিকটতম জাতি হিসাবে দেখি এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইরাকের সাথে আমাদের অধিক ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।"
তিনি বলেন, "প্রতিবেশী দেশসমূহের মধ্যে ইরাকের সাথে আমাদের অধিক ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিরাজ করছে। দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্কের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে এবং এসব ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক সম্প্রসারণে সম্মত হয়েছি।"
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রায়িসি বলেছেন, কয়েকটি আরব দেশের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে ইহুদিবাদী ইসরাইল নিজের জন্য নিরাপত্তা বলয় তৈরি করতে পারবে না। তিনি রোববার তেহরান সফররত ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মুস্তফা আল-কাজিমির সঙ্গে বৈঠক শেষে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
বিগত কয়েক বছর ধরে কিছু আরব দেশের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের ইসরাইলি প্রচেষ্টার প্রতি ইঙ্গিত করে রায়িসি বলেন, “আঞ্চলিক দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের ইসরাইলি প্রচেষ্টা কোনো অবস্থায় এই অবৈধ রাষ্ট্রের জন্য নিরাপত্তা বয়ে আনবে না।”
২০২০ সালের আগস্ট মাসে আমেরিকার মধ্যস্থতায় সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে সক্ষম হয় ইহুদিবাদী ইসরাইল। এরপর সুদান এবং মরক্কো তেল আবিবের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে। এরপর সম্প্রতি নিজের নিরাপত্তা শক্তিশালী করার জন্য আমেরিকার নেতৃত্বে আরব দেশগুলোর সঙ্গে ইরানবিরোধী সামরিক জোট গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে তেল আবিব।
ইরাকি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ইরানের প্রেসিডেন্ট আরো বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি এ অঞ্চলের দেশগুলো নিজেরাই আঞ্চলিক সব সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম। কিন্তু এখানে বিদেশিদের উপস্থিতি সমস্যার কোনো সমাধান করবে না বরং সমস্যার জটিলতা বাড়াবে।”
ইরান ও ইরাক নিজেদের মধ্যকার সম্পর্ক ও সহযোগিতাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে সম্মত হয়েছে বলেও জানান প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রায়িসি। যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ইরাকের প্রধানমন্ত্রী কাজিমি ইরানের সঙ্গে সকল ক্ষেত্রে সহযেগিতা শক্তিশালী করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, তার দেশ সফরে ইচ্ছুক ইরানি জিয়ারতকারীদের জন্য আগের চেয়ে সহজে ভ্রমণের সুযোগ করে দেবে তার সরকার। iqna