বার্তা সংস্থা ইকনা: পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন তৃণমূল সরকার এর আগে ১ অক্টোবর আশুরা/মহররমের দিন দুর্গা প্রতিমা বিসর্জন দেয়া যাবে না বলে নির্দেশিকা জারি করেছিল। এছাড়া ৩০ সেপ্টেম্বর দশমীর দিন রাত ১০ টা পর্যন্ত বিসর্জন দেয়া যাবে বলে বলা হয়েছিল।
সরকারি ওই নির্দেশের বিরোধিতা করে কোলকাতা হাইকোর্টে তিনটি আবেদন জমা পড়েছিল। গত দু’দিন ধরে সেই আবেদনগুলোর ভিত্তিতে শুনানি হয়।
হাইকোর্ট আজ বলেছে, স্বাভাবিক নিয়মে যে ক’দিন বিসর্জন চলে, সেই ক’দিন ধরে রোজ বিসর্জন চলবে এবং একইসঙ্গে মহররমও পালিত হবে। এক্ষেত্রে সরকার যদি আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা করে, তা হলে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে এমনটা ধরে নিয়ে সরকার কখনো নাগরিকদের মৌলিক অধিকারে বা ধর্মাচরণের অধিকারে হস্তক্ষেপ করতে পারে না বলেও আদালত আজ কঠোর মন্তব্য করে সরকারি সিদ্ধান্তে বড়সড় ধাক্কা দিয়েছে।
মামলার শুনানির সময় রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনেরাল কিশোর দত্ত তার সাফাইতে বলেন, যেকোনো অনভিপ্রেত ঘটনা এড়াতেই ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কিন্তু শুধুমাত্র ধারণার উপর ভিত্তি করে রাজ্য সরকার কোনো বিজ্ঞপ্তি জারি করতে পারে না বলে আদালত জানিয়ে দেয়।
এদিকে, মহররমের দিন বিসর্জন বন্ধ রাখায় কোনো কোনো মহল থেকে তাকে মুসলিম সম্প্রদায়কে ‘তোষণ’ করা হচ্ছে বলে সমালোচনা করা হয়।
গতকাল বুধবার একটি পুজো উদ্বোধন করার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই দাবিকে খারিজ করে বলেন, ‘অন্য কোনো ধর্মের অনুষ্ঠানের জন্য একদিন দুর্গা প্রতিমার বিসর্জন বন্ধ থাকতে পারে না! এত কটূক্তি, এত প্রশ্ন কেন? এটা যদি ‘তোষণ’ করা হয়, তা হলে যতদিন বাঁচব, ততদিন সেই তোষণ আমি করব। আমাকে গুলি করে মারলেও তা আমি করে যাব।’
মমতা বলেন, ‘আমার কোনো ভেদ-বিচার নেই। কারণ, এটাই বাংলার সংস্কৃতি, আমার সংস্কৃতি।’
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, তিনি দুর্গাপুজোর উদ্বোধন করলে বা গণেশপুজোয় অংশ নিলে তখন তাকে তোষণ বলা হয় না কেন? যত সমস্যা ঈদ বা মহররম নিয়ে!’
বিসর্জন নিয়ে বিতর্ককে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলেও মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পার্সটুডে