IQNA

কৃষ্ণাঙ্গ হত্যার প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভ, থানায় অগ্নিসংযোগ

0:05 - May 30, 2020
সংবাদ: 2610871
তেহরান (ইকনা): যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনিয়াপোলিস শহরে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে তীব্র প্রতিবাদ-বিক্ষোভ। এক কৃষ্ণাঙ্গ যুবককে হত্যার প্রতিবাদে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ ক্রমশই রূপ নিচ্ছে সহিংসতায়। এদিকে চলমান এই বিক্ষোভের মধ্যে মিনিয়াপোলিসের একটি থানায় অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।।

কৃষ্ণাঙ্গ হত্যার প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভ, থানায় অগ্নিসংযোগস্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাতে এই অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। ওই অগ্নিসংযোগের একটি ভিডিও এরই মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ ভাইরাল হয়েছে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, মিনিয়াপোলিসের বিক্ষোভে কয়েক হাজার আন্দোলনকারী অংশ নেয়। তাদের অনেককে সংলগ্ন বিভিন্ন ভবনের ছাদে অবস্থান নিতে দেখা যায়। স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১০টা নাগাদও বিক্ষোভ শান্ত হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি।

সিএনএনের সাংবাদিক সারা সিডনার জানান, একদিকে থানার ভেতরে ফায়ার অ্যালার্ম বেজে চলছে। অন্যদিকে বিক্ষোভকারীরা উল্লাস করছে। পুলিশের বেষ্টনী ঘিরে লোকজন আতশবাজি করছে। তবে কোনো সাইরেনের শব্দ পাওয়া যায়নি। তাৎক্ষণিকভাবে অগ্নিনির্বাপনকর্মীদের কোনো তৎপরতা পরিলক্ষিত হয়নি।

ঘটনাস্থল থেকে সিএনএনের প্রতিবেদক জোশ ক্যাম্পবেল বলেন, পুলিশ হিসাব কষেই বলপ্রয়োগ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটা হয়তো এ কারণে যে, পুলিশ জানে তাদের উপস্থিতি উত্তেজনার পারদ আরো বাড়িয়ে তুলবে। এতে পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে পড়বে।

জোশ ক্যাম্পবেল বলেন, এটি একটি বিপজ্জনক পরিস্থিতি। আমার মনে হয় পুলিশও সেটা অনুধাবন করছে।

এদিকে মিনিয়াপোলিসে থানায় অগ্নিসংযোগের ঘটনা ছাড়াও বেশ কিছু দোকান-পাট ও প্রতিষ্ঠানে ভাঙ্গচুর-হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া এই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য স্থানেও।

গত ২৫ মে পুলিশ জর্জ ফ্লয়েড নামের এক কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তিকে খুন করলে এ আন্দোলনের সূত্রপাত হয়। পরবর্তী সময়ে ওই হত্যাকাণ্ডের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে আন্দোলন তীব্রতা পায় এবং সহিংস রূপ ধারণ করে।

একজন প্রত্যক্ষদর্শীর ধারণ করা ১০ মিনিটের ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, হাঁটু দিয়ে এক কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তির গলা চেপে ধরে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে এক শ্বেতাঙ্গ পুলিশ সদস্য। নিহত ব্যক্তি নিরস্ত্র ছিলেন। ভিডিওতে নিঃশ্বাস নিতে না পেরে তাকে কাতরাতে দেখা যায়। তিনি বারবার শ্বেতাঙ্গ পুলিশ অফিসারকে বলছিলেন, ‘আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছি না।’

কৃষ্ণাঙ্গদের দাবি, বর্ণবিদ্বেষের বলি হয়েছেন জর্জ ফ্লয়েড। এ ঘটনার প্রতিবাদে প্রথমে স্থানীয়রা রাস্তায় নামলেও পরে দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঢল নামে।

জর্জ ফ্লয়েডের হত্যাকাণ্ড যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের হাতে নাগরিকদের নিহতের উদ্বেগজনক পরিসংখ্যান সামনে এনেছে। সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের তথ্য অনুযায়ী ২০১৯ সালে দেশটিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে এক হাজার ১৪ জন। বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে, নিহতদের বেশিরভাগই কৃষ্ণাঙ্গ।

ম্যাপিং পুলিশ ভায়োলেন্স নামে একটি বেসরকারি সংস্থার চালানো জরিপে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে শ্বেতাঙ্গদের তুলনায় তিন গুণ বেশি মারা যায় কৃষ্ণাঙ্গরা।
সূত্র: ntvbd

captcha