বার্তা সংস্থা ইকনা: এ কথা বলেছেন লেবাননের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহর মহাসচিব সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ। লেবাননের রাজধানী বৈরুত থেকে বৃহস্পতিবার টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে তিনি এ মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ট্রাম্পের এই ঘোষণার পর বায়তুল মুকাদ্দাসে বসবাসরত ফিলিস্তিনিদেরকে ঘর-বাড়ি থেকে বের করে দিতে এবং কৃষি খামার, সম্পদ ও বাগান দখল করা থেকে ইসরাইলকে কেউ বিরত রাখতে পারবে না।
হাসান নাসরুল্লাহ বলেন, ট্রাম্পের এই ঘোষণার পর ইসরাইল নিশ্চিতভাবে গ্রেটার কুদসের ওপর তাদের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালাবে এবং দখলীকৃত পশ্চিম তীরে আরো ভূমি দখল করবে। ট্রাম্পের এ ঘোষণার পর এখন পবিত্র আল আকসা মসজিদসহ মুসলিম ও খ্রিস্টানদের জন্য পবিত্র স্থানাগুলোর ভাগ্যে কী হয় তা নিয়েও তিনি উদ্বোগ প্রকাশ করেন। হিজবুল্লাহ মহাসচিব বলেন, আমেরিকা যখন পবিত্র এই শহরকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে তখন মুসলমানরা চুপ থাকলে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর, দক্ষিণ লেবানন এবং গোলান উপত্যকাকে তারা দখলে নিতে চাইবে। তিনি বলেন, মুসলমানরা চুপ থাকলে শত্রুরা মুসলমানদের অনান্য পবিত্র স্থানের দিকে হাত বাড়াতে দ্বিধা করবে না। হাসান নাসরুল্লাহ বলেন, আন্তর্জাতিক কোনো আইন বা প্রস্তাবনার প্রতি ইহুদিবাদী ইসরাইলের বিন্দুমাত্র শ্রদ্ধা নেই। এছাড়া, আন্তর্জাতিক কোনো নিন্দাবাদের প্রতি তাদের কোনো মনোযোগ নেই কারণ তারা শুধু আমেরিকার অবস্থানকে বিবেচনায় নেয়।
হিজবুল্লাহ মহাসচিব বলেন, ইহুদিবাদী গণমাধ্যম বিশ্লেষণ করছে যে, মুসলমানরা নিজেরাই নিজেদের সমস্যা নিয়ে ব্যস্ত; তারা বায়তুল মুকাদ্দাস নিয়ে মাথা ঘামোনোর সুযোগ পাবে না। সে কারণে আন্তর্জাতিক সমস্ত বিরোধিতা উপেক্ষা করে ট্রাম্প বায়তুল মুকাদ্দাস নিয়ে এই ঘৃণ্য ঘোষণা দিয়েছেন। আমেরিকা ও ইসরাইল মনে করছে, বড়জোর কিছুদিন মুসলমানরা এ নিয়ে বিক্ষোভ করবে এরপর সবকিছু শান্ত হয়ে যাবে। কিন্তু মুসলমানদেরকে মার্কিন পদক্ষেপের বিরুদ্ধে অবশ্যই প্রতিবাদ অব্যাহত রাখতে হবে যাতে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের কাজ করার সাহস না করে। সমস্ত মুসলমান নারী-পুরুষকে এই প্রতিবাদে শামিল হতে হবে। এছাড়া, অবস্থান ধর্মঘট অব্যাহতভাব চালিয়ে যেতে হবে।
হাসান নাসরুল্লাহ আরব দেশগুলো প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, অন্তত মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে তলব করে ট্রাম্পের এ ঘোষণার ব্যাখ্যা চান এবং নিজেদের রাষ্ট্রদূতকে দেশে ডেকে পাঠান। সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ বলেন, আরব দেশগুলোর উচিত ইসরাইলের ওপর চাপ বাড়ানো যাতে তেল আবিব ট্রাম্পের ঘোষণা বাস্তবায়নের সাহস না করে। এছাড়া, আরব দেশগুলোকে তেল আবিবের সঙ্গে সব ধরনের গোপন ও প্রকাশ্য সম্পর্ক অবশ্যই বাতিল করা উচিত। তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার যেকোনো পদক্ষেপ হবে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল।
iqna